আয়কর রিটার্ন দাখিল না করলে কি হয়? আয়কর রিটার্নের সাথে কি কি কাগজপত্র/প্রমাণাদি জমা দিতে হয়?

 

আয়কর রিটার্ন দাখিল না করলে কি হয়? আয়কর রিটার্নের সাথে কি কি কাগজপত্র/প্রমাণাদি জমা দিতে হয়?

আয়কর
রিটার্ন দাখিল না করলে কি
হয়?

আমরা এখনও অনেকেই জানি না আয়কর রিটার্ন জমা না দিলে কি হয়। অনেকে মনেকরি যে আয়কর না আসলে আয়কর রিটার্ন দাখিল করার প্রয়োজন নেই। কিন্তু আমাদের বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে নেওয়া উচিত। আজকে এ বিষয়ে আমরা কিছুটা ধারনা নেওয়ার চেষ্টা করব।যে সকল ক্ষেত্রে
আয়কর রিটার্ন দাখিলের প্রমাণ দলিল বাধ্যতামূলক করা হয়েছে, সে সকল বিষয়ে
আয়কর রিটার্ন দাখিল না করলে সে
সকল সেবা হতে বঞ্চিত হবে। যেমনগ্যাস, বিদ্যুৎ সংযোগ পাওয়া যাবে না কিংবা
সংযোগ বিচ্ছিন্ন হবে,
বেতনভাতা ইত্যাদি
প্রাপ্তিতে অসিুবিধা হবে।

এছাড়াও নিম্নবর্ণিত বিষয় গুলোর মুখোমুখি হবার সম্ভবনা রয়েছে। যেমন:

১. আয়কর আইনের ধারা ২৬৬ অনুযায়ী উপকর কমিশনার কর্তৃক আরোপিত জরিমানা পরিশোধ করা।

২. উপকর কমিশনার কর্তৃক একতরফা ভাবে নির্ধারিত কর পরিশোধ করা।

আয়কর রিটার্নের সাথে কি কি কাগজপত্র/প্রমাণাদি জমা দিতে হয়?

আমরা অনেকেই জানি না আয়কর রিটার্নের সাথে কি কি ডকুমেন্ট জমা দিতে হয়। আজ
আমরা জনবো আয়কর
রিটার্নের
সাথে কি কি কাগজপত্র জমা দিতে
হয়। 
আয়কর রিটার্নের সাথে বিভিন্ন আয়ের স্বপক্ষে যে সকল প্রমাণাদি দাখিল করতে হয় তা নিম্নে উল্লেখ করা হলো:

১.
চাকরি
হতে আয়:

  • বেতন
    বিবরণী
  • ব্যাংক
    হিসাব বা ব্যাংক সুদ
    খাতে আয় থাকলে ব্যাংক
    বিবরণী/ব্যাংক সার্টিফিকেট। 
  • বিনিয়োগ
    রেয়াত থাকলে তার স্বপক্ষে প্রমাণাদি। যেমনজীবন বীমার পলিসি থাকলে প্রিমিয়াম পরিশোধের প্রমাণ।

 ২.
ভাড়া
হতে আয়:


  • বাড়ী ভাড়ার সমর্থনে ভাড়ার চুক্তিনামা বা ভাড়ার রশিদের
    কপি, মাস ভিক্তিক বাড়ী ভাড়া প্রাপ্তির বিবরণ এবং প্রাপ্ত বাড়ী ভাড়া জমা সংশ্লিষ্ট ব্যাংক হিসাব বিবরণী।
  • পৌর
    কর, সিটি কর্পোরেশন কর, ভূমি রাজস্ব প্রদান রশিদের কপি।
  • ব্যাংক
    ঋণের মাধ্যমে বাড়ী কেনা বা নির্মাণ করা
    হয়ে থাকলে ঋণের সুদের ব্যাংক বিবরণী  সার্টিফিকেট।
  •  গৃহসম্পত্তি বীমাকৃত হলে বীমা প্রিমিয়ামের রশিদের কপি।
  • অন্যান্য
    ভাড়ার ক্ষেত্রে ভাড়ার প্রাপ্তি ব্যয়ের দলিল।

৩.
কৃষি
হতে আয়:

  • বর্গা/ভাগের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় দলিলাদি।
  • যেক্ষেত্রে
    করদাতা গ্রস প্রাপ্তির ৬০ শতাংশের অধিক
    খরচ দাবী করেন সেক্ষেত্রে উক্তরূপ  দাবীর প্রয়োজনীয় দলিল।

.
ব্যবসায় হতে আয়:

  • ব্যবসায়
    বা পেশার আয়ব্যয়ের বিবরণী
    স্থিতিপত্র এবং ব্যাংক বিবরণীসহ অন্যান্য দলিল।

৫.
মূলধনি
আয়:

  • স্থাবর
    সম্পত্তি বিক্রয় বা হস্তান্তর এর
    দলিল কপি।
  • উৎসে
    আয়কর জমা হলে তার চালান কপি।
  • পুঁজিবাজারে
    তালিকাভুক্ত কোম্পানির শেয়ার লেনদেন থেকে মুনাফা হলে তার প্রত্যয়নপত্র।

৬.
আর্থিক
পরিসম্পদ
হতে আয়:

  • সিকিউরিটিজ
    স্ক্রিপ্ট হলে তার ফটোকপি আর  স্ক্রিপ্টলেস
    হলে তার হিসাব বিবরণী।
  • সুদে আয়
    থাকলে সুদ প্রদানকারীর প্রত্যয়ন পত্র।
  • প্রাতিষ্ঠানিক
    ঋণ নিয়ে বন্ড/ডিবেঞ্চার কেনা হলে তার প্রয়োজনীয় কাগজপত্র।
  • নগদ
    লভ্যাংশ খাতে আয় থাকলে ব্যাংক
    বিবরণী এবং ডিভডেন্ড ওয়ারেন্টের কপি।
  • সঞ্চয়পত্র হতে সুদ আয় থাকলে সঞ্চয়পত্র
    নগদায়নের সময় বা সুদ প্রাপ্তির
    সময় নেয় সাটির্ফিকেট।
  • ব্যাংক
    সুদ আয় থাকলে ব্যাংক
    বিবরণী।

৭.
অন্যান্য
উৎস হতে আয়:

  • অন্যান্য
    উৎসের সমর্থনে প্রসঙ্গিক কাগজপত্র।

৮.
অংশীদারী
ফার্মের
আয়:

  • ফার্মের
    আয়ব্যয়ের বিবরণী স্থিতিপত্র।

পরিশেষে আমরা বলতে পারি, প্রত্যেক বাংলাদেশের নাগরিকে আয়কর রিটার্ন দাখিল করতে হবে। তা না হলে
উপরে উল্লেখিত সেবা সমুহ থেকে বঞ্চিত হবে। তাছারা অন্যান্য সেবা সমূহ থেকেও বঞ্চিত হতে পারে। তাই আমাদের উচিত বছরের একটি নির্দ্দিস্ট সময়ে আয়কর রিটার্ন জমা দিতে হবে।

সূত্র: আয়কর রিটার্ন প্রস্তুতকারী (টিআরপি) সহায়িকা

About The Author

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top