Site icon Info IT BD

বিটকয়েন (Bitcoin) কি ও কিভাবে কাজ করে?

বিটকয়েন (Bitcoin) কি ও কিভাবে কাজ করে?

 

 বিটকয়েন (Bitcoin) কি ও কিভাবে কাজ করে?

বিটকয়েন (Bitcoin) কি?

সহজ ভাবে বলতে গেলে “বিটকয়েন (Bitcoin)” হলো এক প্রকারের “ক্রিপ্টোকারেন্সি”। ক্রিপ্টোকারেন্সির যে মার্কেট রয়েছে তার প্রায় পুরোটাই অর্থাৎ ৬৫ শতাংশ দখল করে রেখেছে এই ক্রিপ্টোকারেন্সির “বিটকয়েন (Bitcoin)”। এরপর আপনাদের মনে হতে পারে যে “ক্রিপ্টোকারেন্সি” কি?

ক্রিপ্টোকারেন্সি কি?

“ক্রিপ্টোকারেন্সি (Cryptocurrency)” হল একটি Private Digital Currency। ক্রিপ্টোকারেন্সি নতুন একটি বিনিময় ব্যবস্থা। ‘Crypto’ শব্দটির অর্থ হল Secret বা ‘গোপন’ এবং ‘Currency’ শব্দের মানে হল ‘অর্থ’ যার বিনিময়ে বিভিন্ন পণ্যের আগান প্রদান করা হয়। ক্রিপ্টোকারেন্সি এর অর্থ হলো গোপন অর্থ। এই অর্থের লেনদেন সম্পূর্ণ গোপন থাকে এবং এর উপরে কোনো তৃতীয় ব্যক্তির হাত থাকে না।

ব্লক চেইন টেকনোলজি ব্যবহার করা ডিসেন্ট্রালাইজড ডিজিটাল অর্থ হচ্ছে ক্রিপ্টোকারেন্সি (Cryptocurrency)। এটিকে অনেকে আবার ভার্চুয়াল মুদ্রাও বলে থাকে। যা অনলাইনে সেবা বা পণ্য ক্রয়ের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এটি মূলত এক ধরনের শক্তিশালী ক্রিপ্টোগ্রাফি এসব ক্রিপ্টোকারেন্সির সঙ্গে যুক্ত থাকার ফলে অনলাইনে ঝুঁকি বিহীন লেনদেন করা সম্ভব হয়ে উঠে।

যেহেতু ক্রিপ্টোকারেন্সি (Cryptocurrency) এক রকমের ডিজিটাল বা ভার্চুয়াল মুদ্রা, তাই এই মুদ্রা বা কারেন্সিকে কোন সরকার বা রাষ্ট্র উৎপাদন বা সরবরাহ করে না। বিভিন্ন জটিল সব অ্যালগোরিদম, ব্লক এবং ক্রিপ্টোগ্রাফি অনুসরণ করেই এক একটি মুদ্রা বা কয়েন বানাতে হয়। ক্রিপ্টোকারেন্সি (Cryptocurrency) গুলো বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অনলাইন শপিং এ ব্যবহার করা হয়। প্রতিটি দেশের নিজস্ব কারেন্সি যেমন টাকা, রুপি, ইউরো, ডলার, পাউন্ড ইত্যাদি রয়েছে, সেগুলোর সঙ্গে আমরা সকলেই কমবেশি পরিচিত, কিন্তু ক্রিপ্টোকারেন্সি (Cryptocurrency) এদের থেকে কিছুটা আলাদা।

Info IT BD সকল আপডেট পেতে ফলো করুন আমাদের গুগল নিউজ চ্যানেলে

আজকে এই পোস্টের মাধ্যমে বিটকয়েন সম্পর্কে কিছু গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট নিয়ে আলোচনা করব। যা আপনাকে বিটকয়েন সম্পর্কে সম্পূর্ণ জানতে সহায়তা করবে। তাই আপনি যদি বিটকয়েন সম্পর্কে সম্পূর্ণ জানতে চান তাহলে আমাদের এই পোস্টি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।

বিটকয়েন (Bitcoin) আবিষ্কারের উদ্দেশ্য:

বিটকয়েন আবিষ্কার করেছেন জাপানের ইন্জিনিয়ার সাতোসি নাকামোটো (Satoshi Nakamoto)। যা ছিল বিশ্বের প্রথম ক্রিপ্টোকারেন্সি। কিন্তু ঘটনাটি হলো যে একটি রিসার্চ পেপার পাবলিশ করা হয় সেই রিসার্চ পেপার সাতোসি নাকামোটো (Satoshi Nakamoto) নামে একজন ব্যক্তি দাবি করেন যে তিনি বিটকয়েনে এর প্রতিষ্ঠাতা। কিন্তু এটাকে আসলে মনে করা হয় যে এটি একটি ভূয়া নাম বা ভুল নাম এবং এই নামটি হলো একটি কাল্পনিক নাম। আসল ব্যক্তির নাম প্রকাশিত হয়নি। যিনি আবিষ্কার করেছেন আসলে কে তা আমরা কেউ জানি না বা চিনি না। আবার যে নামটি আমরা জানি সেটি নিয়েও ভাবনার বিষয়।

বিটকয়েন যিনি আবিষ্কার করেছেন তার কথা অনুযায়ী বিটকয়েন (Bitcoin) আবিষ্কারের উদ্দেশ্য ছিল সম্পূর্ণ গোপনীয় থাকবে। কার কাছে কতটা বিটকয়েন রয়েছে এবং বিটকয়েন কোথা থেকে কোথায় বিনিয়োগ বা বিনিময় হচ্ছে সেই সাথে সেখানে সরকারের কোনো প্রকার হস্তক্ষেপ থাকবে না। তার কথা অনুযায়ী যেহেতু এটা হচ্ছে প্রাইভেট ডিজিটাল বা ভার্চুয়াল মুদ্রা সেহেতু এর তথ্য বেশি জনগণকে জানানো হয়নি। অর্থাৎ এই উদ্দেশ্য থেকে বিটকয়েনের যে সত্যিকারের আবিষ্কারক তাকে চেনা যায়নি। তাই সাতোসি নাকামোটো (Satoshi Nakamoto) এই নাম নিয়ে বিটকয়েনের আবিষ্কারক অফিসিয়াল ভাবে দাবি করেছেন।

বিটকয়েন কি বন্টন করা যায়?

টাকার যেমন অনেক ভাগ রয়েছে যেমন ১০০ পয়সায় ১ টাকা। আমরা আগের যুগে শুনেছি টাকা কড়ি। সে রকম বিটকয়েনেরও ভাগ রয়েছে। বিটকয়েনের সব থেকে ছোট ভাগটি রয়েছে তাকে Satoshi বলা হয়। ১০০ মিলিয়ন Satoshi নিয়ে একটা বিটকয়েন। ১০০ মিলিয়ন মানে ১০ করি Satoshi। বিটকয়েনের আরও একটি ছোট ভাগ হল মিলিবিটকয়েন। ১০০০ মিলিবিটকয়েন এর অর্থ হলো ১টি বিটকয়েন। সুতরাং বিটকয়েনের ১০০০ ভাগের এক ভাগ হলো মিলিবিটকয়েন। তাই টাকার মত বিটকয়েনকেও ভাগ করা যায়। শুধু তাই নয় বিটকয়েনকে আপনি যে কোন ফ্র্যাকশনে কেনা বেচা করতে পারবেন। তার মানে হলো আপনাকে পুরো একটা বিটকয়েন কিনতে হবে না। আপনি মিলিবিটকয়েন অথবা Satoshi কিনতে পারেন।

বিটকয়েন কিভাবে ট্রান্সফার করা হয়?

PEER to PEER নেটওয়ার্কে বিটকয়েন ট্রান্সফার করা হয়। যেখানে অন্য কোন ব্যক্তির কোনো প্রকার হাত থাকে না। এক ব্যক্তির কম্পিউটার থেকে অন্য এক ব্যক্তির কম্পিউটারে বিটকয়েন ট্রান্সফার করা হয় এবং শুধুমাত্র সেই ব্যক্তি এক্সেস করতে পারে।

বিটকয়েনের ইতিহাস:

২০০৮ সালে বিটকয়েনের আবিষ্কার প্রথম হয়েছিল বলে মনে করা হয়। কিন্তু বিটকয়েন বাজারজাত হয় ২০০৯ সালের দিকে। বিটকয়েন যখন প্রথম বাজারজাত হয় তখন একটি বিটকয়েনের দাম ছিল ০.০৯ ডলার। কিন্তু বর্তমানে একটা বিটকয়েনের দাম প্রায় ২৪ লক্ষ টাকার বেশি। ২০০৮ সাল থেকে ২০২৩ সাল পযর্ন্ত বিটকয়েনের মূল্য যে কতটা বৃদ্ধি পেয়েছে তা ধারনার বাহিরে।

বিটকয়েনের মূল্য নির্ধারন:

বিটকয়েনের ভ্যালুয়েশন কখনো খুব বেশি বাড়তে থাকে আবার কখনো কমতে থাকে। মাত্র তিন সেকেন্ড সময় পর পর বিটকয়েনের মূল্য পরিবর্তিত হতে থাকে। তাই বিটকয়েনে বিনিয়োগ করার সময় এই বিষয়টি মাথায় রাখতে হবে।

বিটকয়েনের সংখ্যা কত?

বিটকয়েনের সর্বমোট সংখ্যা ২১ মিলিয়ন। এর মধ্যে ১৮.৯ মিলিয়ন বিটকয়েন মার্কেটে বিরাজমান রয়েছে। বাকি বিটকয়েন গুলো মালিকানাধীন অর্থাৎ মালিকের কাছে রয়েছে। বিটকয়েনের গোপনীয়তা এতটাই যে এর মালিক কে আছে তা বোঝা যায়নি। অর্থাৎ মোট বিটকয়েনের পরিমাণ ভবিষ্যতেও একই থাকবে। মোট বিটকয়েনের পরিমাণ ২০০৯ সালে যা ছিল ২০২৩ সালে এসেও অপরিবর্তিত রয়েছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে।

বিটকয়েন এর সুবিধা:

বিটকয়েন এর অসুবিধা:

বিটকয়েন এর দাম:

১ বিটকয়েন সমান কত টাকা তা স্বল্প সংখ্যক লোক ছাড়া কেউ জানে না। ১ বিটকয়েন সমান কত টাকা হতে পারে তা জেনে আসা যাক।

১. Bitcoin = ২,১৬১,০২২.৫২ টাকা

২. Bitcoin = ৪,৩২২,০৪৫.০৪ টাকা

৩. Bitcoin = ৬,৪৮৩,০৬৭,৫৬ টাকা

১ বিটকয়েন সমান কত মার্কিন ডলার?

১. Bitcoin = ২০,৮৪৫.১০ মার্কিন ডলার

২. Bitcoin = ৪১,৬৯০.২০ মার্কিন ডলার

৩. Bitcoin = ৬২,৫৩৫.৩০ মার্কিন ডলার

সকল দিক বিবেচনা করে নিঃসন্দেহে বলা যায়, বিটকয়েন বর্তমান অর্থনীতি এবং প্রযুক্তির ক্ষেত্রে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচিত করে দিয়েছে।

Exit mobile version