ব্লগিং মূলত হলো ইন্টারনেটে মত প্রকাশ করা, বিভিন্ন
ধরনের তথ্য শেয়ার করা ও নিত্যদিনের নানান দিক নিয়ে আলোচনা করার অন্যতম একটি জনপ্রিয় মাধ্যম। বর্তমানে ব্লগিং এর মাধ্যমে টাকা
আয় করা যায় বলে এর জনপ্রিয়তা ক্রমশই
বেড়ে চলেছে। যে কোন পেশার
মানুষ এই কাজটি করতে
পারে।
ব্লগিং
কি
ব্লগ মূলত (Blog) একটি ইংরেজি শব্দ। যার আভিধানিক অর্থ হলো ”ভার্চুয়াল ডায়েরী” অথবা ইন্টারনেটে ব্যক্তিগত দিনলিপি। পক্ষান্তরে এই ইংরেজি (Blog) শব্দটি আবার (Weblog)
এর সংক্ষিপ্ত রূপ। ১৯৯৭ সালে জোম বার্গার নামে একজন মার্কিন নাগরিক সর্বপ্রথম (Weblog)
শব্দটি উদ্ভবন করেন। পরবর্তীতে ১৯৯৯ সালের এপ্রিল বা মার্চের দিকে পিটার মেরহোলজ তার নিজস্ব ব্লগ পিটার্স ডট কমে মজা করে (Weblog) শব্দটিকে ভাগ করে (Blog) বলে সম্বোধন করেন। তারপর থেকে (Blog) শব্দটির ব্যবহার ব্যাপক প্রসার ঘটতে থাকে।
ব্লগার
কাকে বলে
মূলত যিনি ব্লগে কোন কিছু শেয়ার বা পোস্ট করে তাকে ব্লগার বলে। ব্লগাররা প্রতিনিয়ত তাদের ওয়েবসাইটে কনটেন্ট যুক্ত করেন এবং ব্যবহারকারীগণ সেখান থেকে তাদের প্রয়োজন অনুযায়ী তথ্য সংগ্রহ করেন এবং সেখানে তাদের মন্তব্য বা অভিব্যক্তি প্রকাশ করেন। সম্প্রতি ব্লগিং ফ্রিল্যান্স সাংবাদিকতার একটি অন্যতম মাধ্যম হয়ে উঠেছে। য়েবসাইট এবং ব্লগ এর মূল পার্থক্য হল ওয়েবসাইট আপডেট করা হয় অনিয়মিত ভাবে এবং ব্লগ আপডেট করা হয় নিয়মিত ভাবে।
যে
ভাবে ব্লগিং শুরু করবেন
আপনি
যদি ব্লগিং শুরু করতে চান তাহলে প্রাথমিকভাবে আপনার নিচের বিষয় গুলো প্রয়োজন হবে।
- একটি
ডিজিটাল ডিভাইস– স্মার্টফোন, ট্যাব, ল্যাপটপ বা কম্পিউটার। - একটি
ইন্টারনেট কানেকশন। - একটি
ইমেল এক্যাউন্ট। - বিশেষ
করে যদি বাংলায় লেখার জন্য বিজয় বা অভ্র সফ্টওয়্যার। - ব্লগিং
সাইট গুরোতে রেখার জন্য একটি এ্যাকাউন্ট।
ব্লগিং
থেকে আয় করার কিছু
কৌশল
- সঠিক
ডোমেইন নাম নির্বাচন করা। - ভাল
মানের হোস্টিং সার্ভিস ব্যবহার করা। - ব্লগ
সাইট ডিজাইন করা। - তথ্য
সম্পূর্ণ কন্টেন্ট লেখা, পাবলিশিং এবং মার্কেটিং করা। - পরিশেষে
ব্লগে এ্যাডসেন্স বা স্পনসরশিপ যুক্ত
করা।
ব্লাগার
সাইটে কাস্টম ডোমেন যুক্ত করার নিয়ম
প্রথমে আমরা ব্লাগার সাইটের সেটিং অপশনে যাব। তারপর একটু নিচের দিকে গিয়ে দেখব ‘Custom domain’ নামে
একটি অপশন। এই অপশনটিতে আমরা
প্রথমে ক্লিক করব। ‘Custom domain’ এ
ক্লিক করার পর যে ইন্টারফেইস
আসবে সেখানে আমাদের ‘Custom domain’ এর নামটি
লিখব। যেমন: www.example.com. তারপর
Save বাটন
এ ক্লিক করে সেভ করতে হবে।
সেভ করার পরে পিকচার নং-২ তে দেওয়া এই
রকম একটি ইন্টারফেইস আসবে এখানে বলা থাকবে আমাদের DNS (Domain Name System) Management অপশনে কাজ করতে হবে। আমার পিকচার নং-২ তে দেখতে পাবো
যে লিখা আছে:-
এই লিখাটির মধ্যে মার্ক করা বিষয় গুরোকে আমাদের যে Domain Panel আছে বা আমরা যেখান থেকে Domain
ক্রয় করেছি, সেই সাইটে গিয়ে Domain Panel
এ এই তথ্য গুলো যুক্ত করতে হবে। এখন আমরা আমাদের মূল Domain Panel
অপশনে চলে আসবো এবং যে Domain
Name নিয়ে কাজ করবো এই Domain
Name এর Manage Option এ গিয়ে ক্লিক করবো। এখানে বলে রাখি আপনারা যে সাইট থেকেই Domain
ক্রয় করেন না কেন, সেই Domain
সাইটের Domain Panel
এ Manage
Option টি থাকবে।
Domain Panel এ Domain
Name এর Manage অপশনে
ক্লিক করার পর যে ইন্টারফেইস
আসবে সেখানে DNS Management নামে একটি
অপশন থাকবে।
এখানে আমরা DNS
Management অপশনে ক্লিক করবো। ক্লিক করার পর আরও একটি ইন্টারফেইস আসবে।
এখানে পর্যায়ক্রমে আমাদের ব্লগার এ দেওয়া তথ্য গুলো যুক্ত করতে হবে। একই সাথে পিকচার নং-৫ এ দেওয়া বিষয় গুলো যথাযথ ভাবে ফিলাপ করতে হবে। প্রথমে Host
Name এর ঘরে www লিখাটি যুক্ত করতে হবে, Record Type এর ঘরে আমরা CNAME
বসাবো এবং Address এর ঘরে ব্লগারে দেওয়া Destination
এর ghs.google.com
মার্ক করা লিখাটুকু আমরা কপি করে Address এর ঘরে বসিয়ে দিবো।তারপর Save Changes অপশনে ক্লিক করে দিবো।
এতে করে সয়ংক্রিয় ভাবে আমাদের তথ্য গুলো নিয়ে নিবে এবং পরের ধাপে চলে আসবে। এরপর আমরা আবার ব্লগার অপশনে গিয়ে দেখবো যে Name:qkumx6tv2yq5
লিখা আছে। এখান থেকে মার্ক করা লিখা কপি করে Host
Name এর ঘরে বসিয়ে দিবো।
তারপর Record Type এর ঘরে আমরা পুনরায় CNAME বসাবো। এরপর পুনরায় ব্লগারে দেওয়া Destination:gv-fnzqzcuqn3w4jh.dv.googlehosted.com
মার্ক করা লিখা অংশটুকু Address এর ঘরে বসিয়ে দিবো।
এখানে বলে রাখা ভাল যে লিখা গুলো কপি করার সময় খেয়াল রাখতে হবে যেন কোন ভাবে ভুল বা স্পেস না থাকে। এতে করে ভুল তথ্য দেওয়ার ফলে আপনার কাস্টম ডোমেনটি সম্পূর্ণ বা আংশিক রুপে নষ্ট হয়ে যেতে পারে। পরবর্তীতে আবার Save Changes অপশনে ক্লিক করে দিবো। এতে করে Custom Domain সেট আপের প্রথম ধাপের কাজ শেষ হবে।
এরপর দ্বিতীয় ধাপে ব্লাগার অপশনে গিয়ে
দেখতে পাবো:-
‘See https://support.google.com/blogger/answer/1233387’
লিখাটি। মূলত এই লিখাটি একটি
লিংক, যেটিতে আমাদের ভিজিট করার জন্য বলা হয়েছে। তাই আমাদের এই লিখাটি যথাযথ
ভাবে কপি করে নতুন একটি ব্রাউজার অপেন করে গুগল সার্চে এই লিখাটে বসিয়ে
কীবোর্ডের ‘Enter‘ বাটন
প্রেস করব।
তারপর যে বিষয় গুলো
আমাদের সামনে আসবে তা হলো পিকচার
নং-৬ ও পিকচার নং-৭ দেখবো তা হলো Setup
a Custom domain লিখাটি
আসবে। এখানে ব্লাগার সাইটে Custom Domain যুক্ত
করার সম্পূর্ণ পদ্ধতি দেওয়া আছে।
এখানে আমরা দেখতে পাবো যে Step1 এবং
Step2 আমরা
কমপ্লিট বা সম্পূর্ণ করে
ফেলেছি। এখন আমরা Step3 এর কাজ সম্পূর্ণ
করবো। মূলত এখানে আমাদের ৪ টি IP
Address দেওয়া থাকবে, এই IP Address গুলো
আমাদের Domain Panel এর DNS
Management অপশনে
যুক্ত করতে হবে।
এখানে বলা আছে এই IP Address গুলো
A-records এ যুক্ত
করতে হবে। সুতরাং Host Name ঘরটি খালি
থাকবে। আর Record Type এর ঘরে
হবে A এবং
Address এর ঘরে IP
Address গুলো বসাতে হবে। এভাবে পর্যায়ক্রমে ৪ টি IP
Address আমাদের DNS Management অপশনটিতে যুক্ত
করতে হবে।
মূলত এই হলো Custom
Domain এর DNS Management সেটিং এর
কাজ। এই কাজ গুলো সম্পূর্ণ
করার পর তথ্যগুলো আপডেট
হতে মূলত ২৪ ঘন্টা সময়
লাগবে, তবে কোন কোন সময় ৪ থেকে ৫
মিনিটে আপডেট হয়ে যায়। তাই আমাদের মনে রাখতে হবে যে এই প্রকৃয়াটি
সম্পূর্ণ হতে ২৪ ঘন্টা সময়
লাগবে বিষয়টি মাথায় রাখতে হবে। এরপর আমরা পুনরায় ব্লগারে গিয়ে সেভ বাটনে ক্লিক করে দিবো। তারপর আমরা আমাদের Custom Domain এ ক্লিক
করে দেখবো যে Custom Domain Name টি
লিখা ঠিক আছে কিনা। অর্থাৎ Custom Domain নামটি শো
করবে। এরপর আবার ব্রাউজারে নতুন একটি ট্যাব ওপেন করে Custom Domain নামটি
সার্চ করবো। সার্চ করার পর আমরা দেখবো
আমাদের সাইটটি শো করছে www.example.com
নামে।
আশাকরি এভাবে পর্যায়ক্রমে কাজগুলো সুষ্ঠভাবে সম্পূর্ণ করলে আপনি পরবর্তীতে নিজে থেকেই ব্লগার সাইটের সাব–ডোমেন কে কাস্টম ডোমেন
এ পরিবর্তন করতে পারবেন।